From Bangladesh To Mars (Story #1)


আমি নুর ইসলাম হামিদ । পেষায় একজন বিজ্ঞানী । জন্ম ১৯৮২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর । এখন সময় হচ্ছে ২০২৮ সাল । আমি একজন বাংলাদেশী । যখন আমার বয়স ২৬,তখন আমি আমেরিকান মহাশূন্য সংস্থায় (NASA) কাজ করার সুজগ পাই । দীর্ঘ ৫ বছর কাজ করার পর সেখান থেকে অনেক দক্ষতা অর্জন করে দেশে ফীরে আসি । এরপর যোগদেই বাংলাদেশ মহাশূন্য সংস্থায় (SPARRSO) । কিছুদিন কাজ করার পর বাংলাদেশ সরকার এর কাছ থেকে অনেক ভাল শারা পাই । আমার কাজের দক্ষতা দেখে সরকার আমাকে পুরষ্কৃত করে । এই সুযোগ এর সৎ ব্যবহার করে সরকারকে আমি আমার ইচ্ছা গুলো জানাই । আমি জানাই যে, বাঙ্গালী কখনো চাঁদে না যেতে পারলেও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এবার ‘মঙ্গলে’ যাওয়া সম্ভব হবে । পৃথিবীর মানুষ এবার পারবে । সরকার পক্ষ আমার পুরো প্লেন শুনার পর তাদের কিছু আক্ষেপ থেকে যায় । আক্ষেপ থাকা সত্যেও তারা আমার কথায় রাজি হয় এবং তারা আমার ওপর বিশ্বাস রাখে । সরকারের অনুমতি অনুশ্বারে আমেরিকা এবং রাশিয়া থেকে রকেট তৈরি করার জিনিস পত্র কেনা হয় । কিন্ত এর আগে আমেরিকা এবং রাশিয়াকে বাংলাদেশ সরকার এর পক্ষ থেকে আমার পুরো প্লেনটুকু জানাতে হয় । আমেরিকা প্রথম সুপারিশে না মানলেও কিছু সময় পর তারা তাদের মেশিন পত্র বিক্রয় করতে রাজি হয় । কিন্ত তারা জানায় যে,তাদের তৈরি মেশিন মঙ্গল পর্যন্ত যেতে পারলেও মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারবে না । বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা মাত্রয় ধ্বংস হবে ১০০% নিশ্চিত । কারন তাদের তৈরি মেশিন মঙ্গলের আবহাওয়ার সাথে ক্ষাপ খেতে পারে না । রাশিয়া প্রথম দফায় রাজি হলেও তারা আমেরিকার মত একই কথা জানায় । এই সকল কিছু আমার আগেই যানা ছিল । যানা সত্যেও আমি এই প্লেন করি । তাদের মেশিনে ত্রূটি বলেই তারা হইত আজও মঙ্গল যাত্রা করতে পারেনি । এসকল কিছুর মানে হচ্ছে এমন অবস্থায় যদি মঙ্গল যাত্রা করা হয়,মৃত্যু নিশ্চিত । তাই আমি আমার একটি নিজেস্ব প্লেন আগেই তৈরি করে রেখেছিলাম । এই প্লেনটি আমি আজও কাওকে বলিনি । আপনাদের বলছি । প্লেনটি হচ্ছে,আমেরিকা এবং রাশিয়ার মহাশূন্য সংস্থা অনুযায়ী তাদের রকেট কেবল মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল এর উপর পর্যন্ত যেতে পারবে । কিন্ত আমি ঠিক করেছিলাম, ক্যাপসুল নিয়ে আমি বায়ুমণ্ডলের ভেতর যাব । এবং যতখন সম্ভব ক্যাপসুলের ভেতর থাকার চেষ্টা করব । যখন দেখব ভেতরে আর কোনো ভাবেই থাকা যাচ্ছেনা,প্যারাসুট ব্যবহার করব । আগে বলে নেই ,ক্যাপসুল জিনিসটি হচ্ছে রকেটের একদম উপর অংশ । ক্যাপসুলের কাজ হচ্ছে,যখন কোনো গ্রহে অবতরণ করা হয় । তখন রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট স্থানে অবতরন করা । অন্যদিকে প্যারাসুট ব্যবহারের জন্যও বায়ুমণ্ডলের একদম ভেতর পর্যন্ত যাওয়া আবশ্যক । নাহলে প্যারাসুট কাজ করবে না । তাই আমি রকেটের গ্যাস এর উপাদান ব্যবহার করে একটি ছোট গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি করি । যার মধ্যে ব্যবহার করেছিলাম লিকুইড অক্সিজেন,নাইট্রোজেন,টেট্র-অক্সাইড এবং হাইড্রজেন-পার-অক্সাইড । আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে,রকেট যখন উপরের দিকে যায় তখন নিচের দিকে গ্যাস ছারতে থাকে । আবার যখন নিচের দিকে নেমে আসে, তখন উপরের দিকে গ্যাস ছারতে থাকে । এতে বুঝাযায় গ্যাস নিচের দিকে বল প্রয়োগ করে বলে রকেটটি উপরে যায় । এবং যখন গ্যাস উপরের দিকে বল প্রয়োগ করে তখন রকেটটি নিচে নেমে আসে । এটা নিশ্চই আপনাদের আগেই যানা ছিল । তবুও বললাম । সব মিলিয়ে কি বুঝলেন ? হে, আমি ঠিক করি যে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার জন্য গ্যাস সিলিন্ডারটি আমার কাঁধে বহন করব এবং সিলিন্ডারটি উল্টো ভাবে রাখব । এতে করে গ্যাসের চাপ আমাকে নিচে নামতে সাহায্য করবে । বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা মাত্রই প্যারাসুট এর ব্যবহার করব । আরেকটি ছিন্তা ছিল যে,ওই সিলিন্ডারও হইত না টিকতে পারে মঙ্গলের আবহাওয়ায় । কিন্তু ছোট একটি যন্ত্র বলে আমি ঝুঁকি নিয়ে নিলাম । এতো হচ্ছে শুধু মঙ্গল গ্রহে ঢুকার প্লেন । সেখান থেকে ফীরে আসার জন্যও দরকার ছিল একটি বিশেষ প্লেন । সেটাও ছিল আমার কাছে । প্লেনটি হচ্ছে,আমেরিকান মহাশূন্য সংস্থা (NASA) ২৬ নভেম্বর ২০১১ সালে মঙ্গলগ্রহে একটি রোবট নিক্ষেপ (Launch) করে । যে রোবট টি ০৬ আগস্ট ২০১২ সালে মঙ্গলে অবতরণ করে । রোবটটির নাম হচ্ছে কিউরিওসিটি (Curiosity) । অবতরণের জন্য রোবটটিতে ব্যবহার হই একটি বিশেষ প্যারাসুট এবং একটি স্পেস ক্রেন । এর সাহায্যে রোবটটি সঠিকভাবে অবতরণ করতে পারে । প্যারাসুট টি অবতরণের কিছুখন পরই নষ্ট হয়ে যায় । কিন্তু স্পেস ক্রেনটি রোবট অবতরণের পর সামান্য দূরে গিয়ে অকেজো হয়ে যায় । অর্থাৎ স্পেস ক্রেনটি মঙ্গলেই রয়ে যায় ।আর এখানে আমার প্লেন হচ্ছে,যদি আমি সঠিক ভাবে মঙ্গলে অবতরণ করতে পারি । তাহলে সেখানেই অবতরণ করব । যেখানে কিউরিওসিটির স্পেস ক্রেনটি পরে আছে । স্পেস ক্রেনটি ক্ষয় হওয়ারও কোনো আবশ্যকতা নেই । স্পেস ক্রেনটির একজন মানুষ বহন করার খমতা আছে । ওটি মেরামত করে যদি ঠিক করা যায় । তাহলে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের উপর পর্যন্ত উঠা আমার জন্য সম্ভব হবে । বায়ুমণ্ডলের উপর ওঠে গেলেই বাকি রাস্তা সহজ । এছিল আমার নিজেস্ব প্লেন । আপনারা নিশ্চই ভাবছেন এত কিছু যানা সত্ত্বেও সরকার কেন বাঁধা দেয় নি । হে,সরকার জানতো আমি যেতে পারব ।কিন্তু আমি আমার নিজেস্ব প্লেন সম্পর্কে কিছু জানাই নি । জানালে হইত সরকার এই মিশনটি বাতিল করে দিত ।




অতঃপর সব কিছু ঠিক মত তৈরি হল । দীর্ঘ ৩ বছরের প্রশিক্ষণে আমি ও আমার আরো ৩ জন সাথী পাইলট আব্দুল ইয়ুসুফ, ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নাফিসা শাহ্‌ এবং ফ্লাইট কমান্ডার জামাল কাঁদির মঙ্গলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম । আমাদের মিশনের নাম দেওয়া হয় (M.A.G Flight-1) মিশনের নামটি আমাদের বঙ্গবীর (মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী)এর নাম অনুস্বারে রাখা হয় । আমারা সকলেই যার যার পরিবার থেকে বিদায় নিলাম । আমার পরিবারে আমার মা ছাড়া আর কেউ নেই । মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসলাম । ০৫ নভেম্বর ২০২১ সাল । সময় দুপুর ১২ টা বেজে ৩০ মিনিট । আমরা ৪ জন মঙ্গল আরোহী,রকেটের ভেতর ঢুকে যার যার স্থান গ্রহন করলাম । সামনের দিকে বসলো পাইলট আব্দুল ইয়ুসুফ এবং ফ্লাইট কমান্ডার জামাল কাঁদির । পেছনের দিকে বসলাম আমি এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নাফিসা শাহ্‌ । অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা সকলে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হলাম । কিছুক্ষণ পর অফিস কক্ষ থেকে আওয়াজ আসলো, আপনারা যাত্রার জন্য প্রস্তুত ? ফ্লাইট কমান্ডার জবাব দিল, আমরা প্রস্তুত । ততক্ষনাত আওয়াজ আসলো, ইঞ্জিন চালু করুন । ১২,১১,১০,৯,৮,৭,৬,৫,৪,বুস্টার ইগনিশন ২,১ উড়ার জন্য প্রস্তুত । বলা মাত্রই আব্দুল ইয়ুসুফ মেশিন চালু করে দিল এবং রকেট যাত্রা শুরু হয়ে গেল । ৫ ঘণ্টার ভেতর আমরা আন্তর্জাতিক মহাশূন্য স্টেশনের কাছা কাছি পৌছে যাই । দেখতে দেখতে ৩ দিন চলে যায় । ৩ দিন পর আমরা চাঁদের কক্ষ পথ অতিক্রম করি । ধীরে ধীরে ৭ মাসও চলে যায় । তখন আমরা মঙ্গলের অনেক টুকু কাছে । যতই দিন যেতে থাকে, ততই যেন আমার ভেতর সাহস বারতে থাকে । মন বলতে থাকে,আমি পারবো । আমি পারবো । আমাদের প্রশিক্ষণ কালীন সময় আমি ভেবেছিলাম,আমার সাথের ৩ জন সাথী মঙ্গল যাত্রা করবে ঠিকই । কিন্তু তাদের ভেতর হইত আমার মত সেই ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা টা নেই । সময়ের সাথে তাও ভুল প্রমান হল । তারপর আমি বুঝতে পারি তাদের ভেতরও আমার মত একই ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা কাজ করে । তাদের ভেতরের ইচ্ছা টুকু যেন তাদের চেহারায় ভেসে উঠে । যেমন আব্দুল ইয়ুসুফের কথা বলি । তিনি রকেটের খাবার কক্ষে বসে একদিন জুস খাচ্ছিলেন । আমি তার কাছে গিয়ে বসলাম । কথা বললাম । হাসা হাসির এক ফাঁকে তিনি বললেন স্যার, একটা কথা বলার ছিল । আমি বললাম, জি অবশ্যই বলুন । তারপর তিনি বললেন স্যার,আমিও একজন মঙ্গল আরোহী । প্রশিক্ষণ আমারো আছে । সুতরাং আমিও মঙ্গলের ভেতর যেতে পারবো । কিভাবে ফীরে আসব সেটা জানিনা । তখন আমি বললাম, হে আপনি ঠিক বলছেন । কিন্তু ঐ দায়িত্ব তো আমার । তিনি বললেন । স্যার আমি জানি । কিন্তু পৃথিবিতে ফীরে যাওয়াটা আপনার জন্য জরুরী । নাহলে আমরা অনেক বড় কিছু হাড়িয়ে ফেলব । কারণ আমরা জানি আপনি মঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করতে পারবেন । কিন্তু ফীরে আসার কোন রাস্তাই নেই । আমি বললাম,ভরসা রাখুন । আমি ফিরতে পারবো কিনা জানিনা । কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করাটাই মানব জাতি এবং আমাদের দেশের জন্য অনেক বর কিছু হবে । তিনি অনেকক্ষণ চিন্তা করার পর আমার কাঁধে হাত রেখে অল্প হাসি দিলেন । অন্যদিকে ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নাফিসা শাহ্‌ কাজে যেমন দক্ষ । আত্মবিশ্বাস এবং সাহসও তেমন ভরপুর । তাঁর মেয়েও তাঁর মতো । পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় তার মেয়ে ইয়ানিতা তাকে বলেছিল,মা তুমি এবার গিয়ে আসো । এর পরের বার আমি যাব । কমান্ডার জামাল কাঁদিরের পরিবারে তার মা ছাড়া তেমন কেউ নেই । আমার মত । তিনি একটু চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন । তিনি আবার তার জীবনের সৃতি গুলু বলতেও পছন্দ করেন । কাজেও অসীম পারদর্শী । ধীরে ধীরে আমরা মঙ্গলের চাঁদের কক্ষ পথ অতিক্রম করি । যখন আমরা মঙ্গলের চাদের কক্ষ পথ অতিক্রম করি তখন জামাল কাঁদির আমাদের তার জীবনের একটি হাসির সৃতি শুনান । তিনি বলেন, যখন আমি ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন খবরে শুনতে পেয়েছিলাম যে মঙ্গল গ্রহের চাঁদ পৃথিবীর আকাশে দেখা যাবে । ভেবেছিলাম মঙ্গলের চাঁদটা হইত আমাদের চাঁদের মতই দেখা যাবে । তখন মাও বেশ কৌতুহল ছিল । সারা রাত মার সাথে ছাদে বসে থাকি । কিন্তু কিছুই দেখা জাইনি । সূর্য উঠার সময় হলে আমরা ঘুমতে চলে যাই । সকালে উঠার পর রেডিওতে শুনতে পারি যে, চাঁদ দেখা গিয়েছে ঠিকি । কিন্তু দেখতে আকাশের তারার মত ছিল । এই খবর শুনার পর মা আর আমি একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকি । জামাল কাদিরের এই ঘটনা শুনার পর আমরা একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকি । অবশেষে দীর্ঘ ৯ মাস যাত্রার পর আমরা মঙ্গল গ্রহের সীমানাই পৌছে যাই । মঙ্গলের সীমানাই পৌছাতেই পাইলট আব্দুল ইয়ুসুফ রকেটের গতি স্থিতিশীল করে দেয় । তারপর ২ ঘণ্টার মধ্যে আমি আমার প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে এবং মহাশূন্যের উপযোগী কাপর (Space Suit) পড়ে প্রস্তুত হই । তিন জন সাথী থেকে বিদায় নিয়ে রকেটের ক্যাপসুলে গিয়ে বসলাম । বিদায় নেয়ার সময় আমি আমার সাথীদের মুখে কেমন যেন একরকম মায়ার আভাষ পাই । কেন যেন তখন মন বলতে থাকে যে, আমাকে ফীরে আসতেই হবে । নিজের জন্য না হোক । এই মানুষ গুলোর জন্য । ক্যাপসুলে ঢুকার আগে আমি আমার কাঁধ ব্যাগের ভেতর গ্যাস সিলিন্ডার এবং প্যারাসুটের ব্যাগ নিয়ে নেই । আমি আমার নিজেশ্ব প্লেন গুলো আমার সাথীদেরও জানাই নি । সুধু তাদেরকে বলে রেখেছিলাম,বেচে থাকলে কমান্ড করব । সেই অনুশ্বারে সকলে কাজ করবেন । তারপর খুদাহহাফেয বলে ক্যাপসুলের দরজা আটকিয়ে দেই । আমার কথা মত পাইলট আব্দুল ইয়ুসুফ ( Aeolis Palus ) নামক জায়গা (মঙ্গলের একটি গর্তের নাম) বরাবর রকেটটিকে নিয়ে যায় । যেখানে কিউরিওসিটি (curiosity) অবতরণ করেছিল । এরপর আব্দুল ইয়ুসুফের কমান্ড আসে,বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য প্রস্তুত ? আমি বলি,প্রস্তুত । তারপর কমান্ডার গননা শুরু করেন,৯,৮,৭,৬,৫,৪,৩,২,১ । বিচ্ছিন্ন করা হল বলে রকেট থেকে ক্যাপসুলটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় । বিচ্ছিন্ন করা মাত্রই আমি আমার নির্দিষ্ট জায়গায় যাওয়া শুরু করি । বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৪০ মিনিটের ভেতর আমি ক্যাপসুল নিয়ে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের ভেতর ঢুকে যাই । বায়ুমণ্ডলে ঢুকা মাত্রই ক্যাপসুলের সামনের দিকে একটু অংশে আগুন ধরে যায় । যত সময় যেতে থাকে ,ঐ আগুনের আকার বড় হতে থাকে । আগুন যখন অতিরিক্ত পরিমানে বারা শুরু হল ।আমি দেরি না করে ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে নিচের দিকে ঝাপ দেই । ঝাপ দেয়া মাত্রই টের পেলাম,বায়ুমন্ডলের অনেক টুকু নিচে এসে পরেছি । অর্থাৎ,এখন প্যারাসুট খুলে দিলেও কাজ করবে । ঐ গ্যাস সিলিন্ডারের আর দরকার হবেনা । প্যারাসুট খুলল ঠিক ভাবে । খুলা মাত্রই আমার ছেরে আশা ক্যাপসুলটির বিস্ফরণ ঘটল । বিস্ফরনের ফলে ক্যাপসুলের একটি আগুন লাগা ভাঙ্গা অংশ প্যারাসুটের সঙ্গে ঘশা খেয়ে প্যারাসুটটি অল্প ছিদ্র হয়ে যায় এবং প্যারাসুটের গ্যাস বের হওয়া শুরু হয় । প্যারাসুটের গ্যাস পুরপুরি না শেষ হয়ে জাওয়ায় আমি মঙ্গলের ভূমির অনেক টুকু কাছাকাছি চলে যাই । এর মধ্যে কমান্ডার জামাল কাঁদিরের কমান্ড আসে । স্যার,আপনি কত টুকু যেতে পেরছেন ? আপনি পারবেন তো ?তখন আমি বলে উঠি,কমান্ডার আমি ঠিক আছি । কিন্তু প্যারাসুট লিক হয়ে গিয়েছে । সঠিক জাগায় পৌছানর আগেই যদি প্যারাসুটের গ্যাস শেষ হয়ে যায়,তাহলে মৃত্যু অনিবার্য । এর পর আর কোন কমান্ড শুনতে পাইনি । প্রাই ভূমির ৫০ ফুট উপরে থাকা অবস্থায় প্যারাসুটের পুরোপুরি গ্যাস শেষ হয়ে যায় । কিছু বুঝে উঠার আগেই অনেক দ্রুত গতির সাথে ৫০ ফুট উপর থেকে আমার অনিচ্ছাকৃত অবতরণ ঘটে । ভেবেছিলাম হইত আর বাচবনা ।
                                                                                       (Space Crane)



কিছুখন পর খেয়াল করলাম যে, আমি বালুর স্তূপের উপর পড়ে আছি । তারপর আস্তে ধীরে উঠে বসলাম । আসে পাশে তাকিয়ে দেখলাম । তখন প্রায় অন্ধকার হয়ে যাচ্ছিল । বুঝলাম,সন্ধ্যা হচ্ছে । কিন্তু মনে মনে ভাবতে থাকলাম, জায়গাটা চেনা চেনা লাগছে । হঠাৎ মনে আসলো আরে,এতো মঙ্গল গ্রহের ভেতর । এর মানে আমি মঙ্গলে অবতরণ করতে সফল হয়েছি । আমি সফল হইয়েছি বলে জোরে চিৎকার করলাম । মনে মনে হাসলাম আর বললাম, শুধু শুধুই চিৎকার করছি । শোনার মতো তো কেও নেই । হইত অবতরণের সময় অনেক উপর থেকে পড়ে যাওয়ায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম । তাই জ্ঞান ফিরার পর কিছু মনে করতে পারছিলাম না । কানের রেডিও মেশিনটি চালু করলাম । কিন্তু কাজ করছিল না । হইত মাথায় চাপ পরাতে রেডিও মেশিনটিতে অসবিধা করছিল । কিছু সময় নিয়ে রেডিও মেশিনটি ঠিক করলাম । ঠিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমান্ড করলাম । ১৫-২০ বার চেষ্টা করলাম । কিন্তু বিপরীতে কোন আওয়াজ আশেনি । ততখনে মঙ্গলের আকাশ অনেক টুকু অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল । আমার সুট এর পকেটে একটি সময় নির্ণায়ক যন্ত্র (Timer) ছিল । যন্ত্রটি সেট করলাম । কতটুকু সময় আমি মঙ্গলে অবস্থান করি তা পরিমাপ করার জন্য । প্রায় ২ ঘণ্টা পর রেডিও মেশিনটি আবার চালু করলাম । কমান্ড দিলাম । অনেকবার চেষ্টা করলাম । কিন্তু কোন শ্বারা পেলাম না । রেডিও মেশিনটি চালু করে রাখলাম । কমান্ড পাওয়ার আশায় । চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল । হাতে থাকা টর্চ লাইট চালু করলাম । তারপর দেরি না করে একটু একটু করে হেটে ঐ নষ্ট স্পেস ক্রেনটি খুজা শুরু করলাম টর্চ লাইট দিয়ে । কারণ আমার অনুমান অনুস্বারে আমি স্পেস ক্রেনটির আসে পাশেই অবতরণ করেছি । তা ছাড়া মঙ্গগলের চাঁদের আলোতেও অনেকটুকু সাহায্য পাচ্ছিলাম । ১,২,৩ এমন করে প্রায় ১৫ -২০ কিলোমিটার হাটলাম । চারপাশে অনেক খুজলাম । তেমন কিছুই পেলাম না । ভাবতে থাকলাম, স্পেস ক্রেনটি কি ঝড়ের বাতাসে অন্য কোথাও চলে গেল । নাকি আমি ভুল যাগায় অবতরণ করেছি । ভাবতে ভাবতে হঠাৎ এক যাগায় চোখ পরল । দেখলাম, একটি বড় পাথর ।যার এক কোনে চাঁদের আলো পড়ে কেমন যেন ঝক ঝক করছে । অবাক হলাম । এ কেমন পাথর । চিন্তা করতে করতে পাথরটির কাছে গেলাম । টর্চ জ্বালিয়ে দেখলাম । চাঁদের আলো পরা অংশটিকে লোহার পাতের মতো দেখা যাচ্ছিল । দেখতে পাথরের মতো হলেও কেন যেন পাথর মনে হচ্ছিল না । মনে হচ্ছিল কোন কিছুর উপর বালু জমাট হয়ে আছে । হাত দিয়ে বালু পরিষ্কার করার চেষ্টা করলাম । একটু বালু সরাতেই আরো লোহার পাতের অংশের মতো বেরহয়ে আসলো । তারা তারি করে ঐ পাথরের আরো কিছু বালু পরিষ্কার করলাম । যতই পরিষ্কার করি,ততই যেন পাথরটি একটি বড় মেশিনের রুপ নিচ্ছে । পুরো পুরি পরিষ্কার করার পর আমি অবাক । একী, এতো স্পেস ক্রেন । যেটা আমি এতক্ষণ ধরে খুঁজছিলাম । জোরে চিৎকার করলাম,পেয়ে গিয়েছি । আবার মনে আসলো,শোনার মতো তো কেউ নেই । সুধু শুধুই চিৎকার করছি । স্পেস ক্রেনটি ভাল করে পর্যবেক্ষণ করলাম । ক্রেনটির অবস্থা তেমন খারাপ ছিল না । সুধু গ্যাস সিলিন্ডার গুলো অকেজ হয়ে গিয়েছিল ।



দেরি না করে সিলিন্ডার গুলো মেরামত করা শুরু করে দিলাম । ৪টি সিলিন্ডারের মধ্যে ৩টি ঠিক করে ফেললাম । ৪ নম্বর সিলিন্ডার টি ঠিক করতে গিয়ে দেখলাম সিলিন্ডারটি পুরো পুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে । কোন ভাবেই ঠিক করা যাচ্ছিল না । গভীর চিন্তাই অনেক টুকু সময় কেটে যায় । ভাবতে থাকলাম কি করা যায় । রেডিও মেশিনে কোন সারা পাচ্ছিনা,একদিনের বেশি সময় পার হয়ে গেলে না খেয়ে টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে যাবে । অক্সিজেন ট্যাঙ্কও প্রায় অরধেক খালি হয়ে গিয়েছে । ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যে হয়তো পুরটাই খালি হয়ে যাবে । অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে মৃত্যু অনিবার্য । হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল । সঙ্গে সঙ্গে ঐ বুদ্ধি অনুস্বারে কাজ করা শুরু করলাম । নষ্ট হয়ে যাওয়া সিলিন্ডারটি স্পেস ক্রেন থেকে খুলে ফেললাম । আর আমার কাঁধে বহনক্রিত সিলিন্ডারটি স্পেস ক্রেনে স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিলাম । প্রথমে স্পেস ক্রেন এর সিলিন্ডারের অবস্থানে আমার বহন করা সিলিন্ডারটি বসানোর চেষ্টা করলাম । কিন্তু কোন ভাবেই হল না । স্পেস ক্রেন এর অনুপাতে আমার বহন করা সিলিন্ডারটি মাপে একটু বড় হচ্ছিল । তাই আমি আমার সিলিন্ডারটি ঐ স্থানে না বসিয়ে স্পেস ক্রেন এর অন্য একটি খালি জাগায় বসালাম । তারপর পাইপের মাধ্যমে লাইন বানিয়ে স্পেস ক্রেন এর সিলিন্ডারের জাগায় পাইপ স্থাপন করলাম । সবগুলো সিলিন্ডার একত্রে সংযোগ দিলাম । স্পেস ক্রেন এর ভেতরে জমে থাকা বালু পরিষ্কার করলাম । তখন ভোর হচ্ছিল । সূর্যের আলো যেন নতুন দিনের আভাষ দিচ্ছিল । স্পেস ক্রেনের ভেতর চেপে বসলাম । মেশিনটি চালু হয় নাকি পরিক্ষা করার জন্য । চালু করার জন্য ক্রেন এর সব গুলো সুইচ চাপলাম । ইঞ্জিনে পাওয়ার দিলাম । সঙ্গে সঙ্গে স্পেস ক্রেনটি চালু হয়ে গেল । কিন্তু তখন আর চিৎকার দিতে ইচ্ছা হল না । কারণ রেডিও মেশিন এভাবে অচল হয়ে থাকলে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের উপরে অবস্থান ক্রিত সাথীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব না ।আর এমন হলে আমার সাথীরা আমাকে উদ্ধার করতে পারবেনা । স্পেস ক্রেন নিয়ে উপরে উঠতে পারলেও,যদি রকেটের গতি পথ এবং এর বর্তমান অবস্থান না জেনে উঠে যাই । তাহলে রকেট পর্যন্ত পৌছানো অসম্ভব হয়ে যাবে । সব চিন্তা বাদ দিয়ে আমি আমার প্রধান কাজ করার জন্য প্রস্তুত হলাম ।



স্পেস ক্রেন থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে গিয়ে বিভিন্ন রকম পাথর এর টুকরো সংগ্রহ করলাম । যে জিনিস গুলো দেখতে একটু অদ্ভুত মনে হল । তাও সাথে নিয়ে নিলাম । তারপর উঁচু একটি স্থানে গিয়ে পেছন থেকে বাংলাদেশের পতাকাটি বের করলাম । পতাকাটি খুললাম এবং মাটিতে বসিয়ে দিলাম । পতাকা ধরে দারিয়ে থাকলাম । ভাবতেই যেন কেমন অদ্ভুত লাগছিল । ৪৫০ হাজার কোটি বছর আগেও যে গ্রহে প্রানী বলতে কিছু ছিলনা,সে গ্রহে আজ আমি একা একটি মানুষ দারিয়ে আছি । এই গ্রহের যেখানেই যাই । আমিই প্রথম মানব । তখন সুধু একটাই চাওয়া ছিল । পৃথিবীতে ফীরে না যেতে পারলেও অন্তত মানব জাতি এবং বাঙ্গালি জাতি জানুক , তারা মঙ্গলে অবতরণ করতে পেরেছে এবং তারাই পারবে সব কিছু সাধন করতে । যেহেতু মানব জাতি সৃষ্টির সেরা জীব । ধীরে ধীরে সূর্য মাথার উপর এসে গেল । অর্থাৎ তখন দুপুরের সময় । আমিও ধীরে ধীরে স্পেস ক্রেন এর দিকে চলে গেলাম । স্পেস ক্রেনে ঢুকে বসলাম । রেডিও মেশিনটি স্পেস ক্রেন এর ভেতরেই ছিল । হঠাৎ যেন রেডিও মেশিন থেকে একটু আওয়াজ শুনা গেল । সঙ্গে সঙ্গে হাতে নিয়ে কমান্ড করলাম । বিপরীত পাশ থেকে কে যেন কথা বলতে চেষ্টা করছে । রেডিও মাশিনটি নিয়ে ক্রেন থেকে বের হলাম । বের হওয়া মাত্রই কমান্ডার জামাল কাদিরের কণ্ঠ শুনতে পেলাম । সঙ্গে সঙ্গে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো । মনে হচ্ছিল অনেক বছর পর একজন মানুষের কণ্ঠ শুনতে পেলাম । তারপর আমি বল্লাম কমান্ডার, মিশন রিপোর্ট চূড়ান্ত । আমি বেচে আছি । কমান্ডার, আমি বেচে আছি । বলে চুপ করে থাকলাম । কোন সাঁরা পাওয়া গেল না । কিছুখন পর জামাল কাঁদির যেন চিৎকার করে বলল, ক্যাপ্টেন হামিদ আমরা আপনাকে শুনতে পাচ্ছি । মনে হল তাদেরও যেন চোখ দিয়ে পানি ঝরছে আমি বেচে আছি শুনে । দেরি না করে বললাম,কমান্ডার জামাল কাঁদির । পৃথিবীর মানুশকে জানিয়েদিন । তারা পেরেছে । বাঙ্গালী জাতিকে জানিয়েদিন তারা অসম্ভবকে সম্ভব করেছে । ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নাফিসা শাহ্‌ রেডিও বার্তার মাধ্যমে (SPARRSO) এবং (NASA) কে জানিয়ে দিল । তারপর আমি শান্তির নিশ্বাস ফেললাম । কমান্ডার জামাল কাঁদির আর দেরি না করে আমার কমান্ড অনুস্বারে কাজ শুরু করলেন । আপনারা এই মুহূর্তে কোন জাগায় আছেন ? আমি জিজ্ঞাসা করলাম । তিনি বললেন । ক্যাপ্টেন,আপনাকে যেখান থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল । আমরা বর্তমানে সেখান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছি । আমি বললাম,আমি একটি স্পেস ক্রেন নিয়ে রকেটে ফীরে আসার জন্য প্রস্তুত আছি । আপনারা কি আমাকে উদ্ধার করতে পারবেন ? জামাল কাঁদির অবাক হয়ে বললেন,অবশ্যই ক্যাপ্টেন । কিন্তু আপনি স্পেস ক্রেন পেলেন কোথা থেকে ? আমি বললাম, সব খুলে বলব । আগে আমাকে বলুন,আপনাদের ঐ পূর্বে অবস্থানকৃত জাগায় ফীরে যেতে কত টুকু সময়ের প্রয়োজন হবে । তিনি বললেন ১ ঘণ্টা । আমি বললাম,ঠিক আছে । আগামী ১ ঘণ্টার মধ্যে আমি ঠিক ঐ যায়গায় স্পেস ক্রেন নিয়ে অবস্থান নিব যেখানে আমরা রকেট নিয়ে প্রথম অবস্থান নিয়েছিলাম । স্পেস ক্রেনে যথেষ্ট পরিমান গ্যাস নেই । আমি চেষ্টা করব রকেটের কাছা কাছি আসার জন্য । বাকিটা ভাগ্যের উপর । যদি না আশতে পারি তাহলে হইত মৃত্যু না আশা পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের উপর ঘুরে বেরাতে হবে । জামাল কাঁদির বললেন,ক্যাপ্টেন । আপনি সুধু বায়ুমণ্ডলের উপর পর্যন্ত আসার চেষ্টা করুন । বাকিটা আমরা দেখে নিব । আমি বললাম,ঠিক আছে । আমি স্পেস ক্রেন নিয়ে উড়ার জন্য প্রস্তুত । আমি আর দেরি না করে ১০,৯,৮,৭,৬,৫,৪, বলে ইঞ্জিন চালু করলাম । ৩,২ এবং ১ বলে যাত্রা শুরু করলাম । ৪০ মিনিট এর ভেতর বায়ুমণ্ডলের উপর চলে আসলাম । আমার হাতে ছিল আর ২০ মিনিট । উপরের দিকে উঠতেই থাকলাম । এর ১০ মিনিট পর স্পেস ক্রেন এর গ্যাস একদম শেষ হয়ে গেল । কি করব চিন্তা করে পাচ্ছিলাম না । তখনই আমি আমাদের মিশনের রকেট টি মাথার উপর দেখতে পেলাম । মনে হল যেন আমি পৃথিবীতে ফীরে যেতে সফল হয়েছি । কিন্তু ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম রকেটটি আমার অনেক উপরে । জামাল কাঁদির কমান্ড করল । ক্যাপ্টেন,আমরা আপনার স্পেস ক্রেনটি দেখতে পাচ্ছি । আপনি চিন্তা করবেন না । অল্প সময়ের মধ্যেই নাফিসা শাহ্‌ আপনাকে উদ্ধার করার জন্য রকেট ত্যাগ করবে । তারপর অল্প সময়ের মধ্যে নাফিসা শাহ্‌ Space Chair (যার সাহায্যে মহাকাশ চারীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়েত করে) এবং স্পেস সুট পরিধান করে রকেট থেকে নেমে গেল । নাফিসা শাহ্‌ বলল,ক্যাপ্টেন । আমি আপনাকে দেখতে পাচ্ছি । আপনার কাছে আশার জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন হবেনা । যখন নাফিসা শাহ্‌ এর কথায় উত্তর দিতে গেলাম ।তখন দেখলাম শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে । মিটারের দিকে তাকিয়ে দেখি অক্সিজেন মাত্র ৫ % বাকি । নাফিসা শাহ্‌ কে বললাম,যত টুকু সম্ভব জলদী নেমে আসুন । আমার অক্সিজেন একদম শেষ পর্যায়ে । তারপর আর কিছু বলতে পারিনি । অক্সিজেন শেষ হওয়াতে আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । অনেকক্ষণ পর যখন চোখ খুলি,তখন দেখতে পাই আমার তিনজন সাথী আমার তিন পাশে বসে আছে এবং আমি রকেটের ভেতরে । বুঝলাম,বেচে আছি । জ্ঞান আসার পর আমার তিনজন সাথী আমাকে জড়িয়ে ধরল । আমি অল্প হাসলাম । তারপর নাফিসা শাহ্‌ আমাকে বললেন,তিনি স্পেস ক্রেন এর কাছে গিয়ে দেখেন আমি অজ্ঞান হয়ে আছি । তিনি স্পেস ক্রেন এর দরজা খুলে আমাকে উদ্ধার করেন এবং কমান্ডার জামাল কাঁদির (Space chair) এর চেইন ঘুড়িয়ে আমাদের দুজনকে রকেটের ভেতর নিয়ে আশেন । আমি বেচে যাই । তারপর আমি আমার নিজেস্ব প্লেন গুলো আমার সাথীদের যানাই । দীর্ঘ ৯ মাস পর আমরা পৃথিবীতে ফীরে আসি । এ উপলক্ষে পুরো মানবজাতি এবং বাঙ্গালী জাতি গর্বের দিন পালন করে । বাংলাদেশ এবং আমেরিকান সরকার আমাদের ৪ জন নভোচারীকে পুরস্কৃত করে । এভাবে আমাদের মঙ্গল যাত্রার মঙ্গল ঘটে ।



মঙ্গলের মিশন সফল হওয়ার পর (SPARRSO) অনেক উন্নতি সাধন করে । নতুন অনেক মিশন গঠিত হয় । SPARSSO বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয় । আমার বয়স এখন ৪৬ বছর । SPARSSO বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক পদে নিযুক্ত আছি । নিজে যতটুকু জানি,শিক্ষার্থীদের শিখানোর চেষ্টা করছি । এবং (SPARSSO) এর আগামী মিশন শনি গ্রহ । ঐ মিশনের জন্য কাজ করছি ।
লেখক তেমন ভাল গল্প লিখতে পারেনা ।
তবুও আমার গল্পটি লেখার জন্য তাকে ধন্যবাদ যানাই ।

My Instagram